জগন্নাথের মতে রসস্বরূপ ও স্থায়ীভাবের স্বরূপ
উত্তমোত্তম কাব্যের অসংখ্য ভেদ থাকলেও সাধারণভাবে ধ্বনি ২ প্রকার ১. অভিধামূল ২. লক্ষণামূল। অভিধামূল ধ্বনি ৩ প্রকার – রসধ্বনি, বস্তুধ্বনি ও অলঙ্কারধ্বনি। রসধ্বনি হল অসংলক্ষক্রমব্যঙ্গ্যের উপলক্ষণ। অসংলক্ষক্রমব্যঙ্গ্য দ্বারা রস, ভাব, রসাভাস, ভাবাভাস, ভাবশান্তি, ভাবোদয়, ভাবসন্ধি ও ভাবশবলতার গ্রহণ হয়েছে। লক্ষণমূলধ্বনি দ্বিবিধ – অর্থান্তরসংক্রমিতবাচ্য ও অত্যন্ততিরস্কৃতবাচ্য। ত্রিবিধ অভিধামূল ও দ্বিবিধ লক্ষণামূল এই পঞ্চপ্রকার ধ্বনির মধ্যে রসধ্বনি অত্যন্ত চমৎকৃতিহেতু তাই রসধ্বনির আত্মভূত রসের স্বরূপনিরূপণে প্রবৃত্ত হয়েছেন জগন্নাথ।
রসস্বরূপ নিরূপণাবসরে একাদশ বিকল্প তিনি দেখিয়েছেন। এর মধ্যে অভিনবগুপ্তপাদ, ভট্টনায়ক, ভট্টলোল্লট ও শ্রীশঙ্কুকের মত উল্লেখযোগ্য। অভিনবগুপ্তের মতে রসের স্বরূপ দেখিয়েছেন - ‘ভগ্নাবরণা চিদ্বিশিষ্টা রত্যাদিঃ স্থায়ী ভাবো রসঃ’ এবং স্বসিদ্ধান্তও প্রকট করেছেন - ‘রত্যাদ্যবচ্ছিন্না ভগ্নাবরণা চিদেব রসঃ’। এখানে শ্রুতিপ্রমাণ হল - ‘রসো বৈ সঃ’।
চৈতন্যাংশকে আশ্রয় করে রসের নিত্যত্ব স্বপ্রকাশকত্ব প্রতিপাদন করা হয় এবং রত্যাদ্যংশকে আশ্রয় করে অনিত্যত্ব এবং পরপ্রকাশ্যত্ব প্রতিপাদন করা হয়।
‘চর্ব্যমাণো রসঃ’ এই প্রাচীন ব্যবহারে চর্বণ বলতে চিদ্গতাবরণভঙ্গকেই বোঝানে হয়েছে। এবং এই রসাস্বাদের সঙ্গে পরব্রহ্মাস্বাদের কিছু ভেদ আছে। পরব্রহ্মাস্বাদ হল নির্বিকল্প কাব্যের রসাস্বাদ বিভাবাদিবিষয় সংবলিত হওয়ার জন্য সবিকল্প। কাব্যের রসাস্বাদ কাব্যের ব্যাপার দ্বারাই উৎপাদিত হয়।
জগন্নাথের মতে রস ৯ প্রকার –
शृङ्गारः करुणः शान्तो रौद्रो वीरोऽद्भुतस्तथा।
हास्यो भयानकश्चैव बीभत्सश्चेति ते नव॥
পূর্বপক্ষীরা নাটকে শান্ত রসের উপস্থিতি অসম্ভব বলে থাকেন –
शान्तस्य शमसाध्यत्वान्नटे च तदसंभवात्।
अष्टावेव रसा नाट्ये न शान्तस्तत्र युज्यते॥
কিন্তু এই মতটি দুষ্ট। সঙ্গীতরত্নাকরেও ৯ টি রস স্বীকার করা হয়েছে –
अष्टावेव रसा नाट्येष्विति केचिदचूचुदन्।
तदचारु यतः कंचिन्न रसं स्वदते नटः॥
তাই মম্মটও अष्टौ नाट्ये रसाः स्मृताः বলে शान्तोऽपि नवमो रसः বলেছেন।
এদের স্থায়ী ভাব–
रतिः शोकश्च निर्वेदक्रोधोत्साहश्च विस्मय।
हासो भयं जुगुप्सा च स्थायिभावाः क्रमादमी॥
ঘটাদি থেকে ঘটাদি দ্বারা অবচ্ছিন্ন আকাশের যে ভেদ তাই রস ও স্থায়ী ভাবের ভেদ – অভিনব গুপ্ত ও ভট্টনায়ক।
অনির্বচনীয় রজত ও সত্য রজতের ভেদের মতো এদের ভেদ – তৃতীয় মত (নব্যমত)
চতুর্থ মতে জ্ঞান ও বিষয়ের ভেদের মতো এদের ভেদ।
যদিও স্থায়ী ভাব পারমার্থিক ভাবে স্থায়ী নয় তথাপি সমস্ত প্রবন্ধ ব্যাপ্ত থাকে অর্থাৎ অপরিবর্তিত থাকে তাই একে স্থায়ী ভাব বলে।
স্থায়ী ভাবের অভিব্যক্তি অবিচ্ছিন্নরূপে মুহুর্মুহুঃ হয়, ব্যভিচারি ভাবের অভিব্যক্তি বিদ্যুৎ প্রকাশের ন্যায় এটিই উভয়গত ভেদ।
विरूद्धैरविरुद्धैर्वा भावैर्विच्छिद्यते न यः।
आत्मभावं नयत्याशु स स्थायी लवणाकरः॥
चिरं चित्तेऽवतिष्ठन्ते संबध्यन्तेऽनुबन्धिभिः।
रसत्वं ये प्रपद्यन्ते प्रसिद्धाः स्थायिनोऽत्र ते॥
আরও বলা হয়েছে –
सजातीयविजातीयैरतिरस्कृतमूर्तिमान्।
यावद्रसं वर्तमानः स्थायिभाव उदाहृतः॥
স্থায়ী ভাবের রত্যাদ্যন্যতমত্বং স্থায়িত্বং লক্ষণটি দুষ্ট। কারণ রতি প্রভৃতি নয়টি ভাবের একটি প্রধান হলে অপ্রধান গুলি ব্যভিচারী হয়। প্রাধান্য এখানে বিভাবাদিসংখ্যা।
সঙ্গীতরত্নাকরেও বলা হয়েছে –
रत्यादयः स्थायिभावाः स्युर्भूयिष्ठविभावजाः।
स्तोकं विभावैरुत्पन्नास्त एव व्यभिचारिणः॥
এইভাবে বীররসে ক্রোধ, রৌদ্রে উৎসাহ ও শৃঙ্গারে হাস্য ব্যভিচারী হয়।
এরপর স্থায়ীভাবের লক্ষণ নিরূপণে প্রবৃত্ত হয়েছেন জগন্নাথ –
१. स्त्रीपुंसयोरन्योन्यालम्बनः प्रेमाख्यश्चित्तवृत्तिविशेषो रतिः स्थायिभावः।
२. पुत्रादिवियोगमरणादिजन्मावैक्लव्याख्यश्चित्तवृत्तिविशेषः शोकः ।
३. नित्यानित्यवस्तुविचारजन्मा विषयविरागाख्यो निर्वेदः।
४. गुरुबन्धुवधादिपरमापराधजन्मा प्रज्ज्वलनाख्यः क्रोधः।
५. परपराक्रमदानादिस्मृतिजन्मा औन्नत्याख्य उत्साहः।
६. अलौकिकवस्तुदर्शनादिजन्मा विकासाख्यो विस्मयः।
७. वागङ्गादिविकारदर्शनजन्मा विकासाख्यो हासः।
८. व्याघ्रदर्शनादिजन्मा परमानर्थविषयको वैक्लव्याख्यः स भयम्।
९. कदर्यवस्तुविलोकनजन्मा विचिकित्साख्यश्चित्तवृत्तिविशेषो जुगुप्सा।
বিভাবয়ন্তী ইতি বিভাবঃ অর্থাৎ বিশেষরূপে ভাবিত বা উৎপাদিত করে তাকে বিভাব বলে। কার্যরূপে যারা প্রসিদ্ধ তাদের অনুভাব বলে। অনু অর্থাৎ পশ্চাৎ ভাব অর্থাৎ উৎপত্তি যাদের অথবা যারা অনুভাবিত করে তাকে অনুভাব বলে এই দুটি অনুভাবপদের ব্যুৎপত্তিলভ্য অর্থ। যা এদের দ্বারা উৎপন্ন হয় তাকে ব্যভিচারী বলে।
शृङ्गारस्य स्त्रीपुंसावालम्बने। चन्द्रिकावसन्तविविधोपवनरहःस्थानादय उद्दीपनविभावाः। तन्मुखावलोकनतद्गुणश्रवणकीर्तनादयोऽन्ये सात्त्विकभावाश्चानुभावाः। स्मृतिचिन्तादयो व्यभिचारिणः।
No comments:
Post a Comment